কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের জন্মদিন আজ সোমবার। বেঁচে থাকলে স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত এই নায়ক আজ ৮১ বছরে পা রাখতেন। ১৯৪২ সালের ২৩শে জানুয়ারি রাজ্জাক কলকাতায় জন্ম গ্রহণ করেন।

২০১৭ সালের ২১শে আগস্ট তিনি ঢাকায় মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫। নায়ক রাজের জন্মদিনে যথারীতি তার পারিবারিক উদ্যোগে দিনটিতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়ে থাকে। আজ বাদ যোহর আজাদ মসজিদেও নায়ক রাজের কিছু প্রিয় মানুষদের খাওয়ানো হবে। বাদ আছর বাসায় পারিবারিক মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

ব্যক্তি জীবনে নায়করাজ রাজ্জাক ১৯৬২ সালে খায়রুন নেসার (লক্ষী) সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে নতুন জীবন শুরু করেন। এ দম্পতির সন্তানরা হলেন রেজাউল করিম (বাপ্পারাজ), খালিদ হোসেইন (সম্রাট), নাসরিন পাশা শম্পা, রওশন হোসেন বাপ্পি, আফরিন আলম ময়না। এরমধ্যে বাপ্পারাজ ও সম্রাট চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেছেন।

পশ্চিমবঙ্গে থিয়েটারে অভিনয় করার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেন রাজ্জাক। ১৯৫৯ সালে ভারতের মুম্বাইয়ের ফিল্মালয়ে চলচ্চিত্রের ওপর পড়াশোনা ও ডিপ্লোমা ডিগ্রি গ্রহণ করেন তিনি। পরে কলকাতায় ফিরে শিলালিপি ও আরও একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। কিছুদিন পর দাঙ্গা শুর হলে ঢাকায় চলে আসেন। ষাটের দশকে চলচ্চিত্র নির্মাতা সালাউদ্দিনের ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ চলচ্চিত্রে একটি পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় রাজ্জাকের।

পরবর্তীতে জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে অভিনয়ের মাধ্যমে মূল চরিত্রে যাত্রা শুরু করেন। এই চলচ্চিত্রে তার বিপরীতে নায়িকা হিসেবে ছিলেন কোহিনূর আক্তার সুচন্দা। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ষাট দশকের শেষ থেকে আশি দশক পর্যন্ত এই সময়ে অনেক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দিয়েছেন। তিন শতাধিক বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেছেন। চলচ্চিত্রকে ভালোবেসে গড়ে তুলেছেন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রাজলক্ষী প্রোডাকশন। ১৯৭৭ সালে ‘অনন্ত প্রেম’ চলচ্চিত্র পরিচালনার মাধ্যমে নিজেকে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন।

কিংবদন্তী এ অভিনেতা পাঁচবার সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছেন। এছাড়াও শিল্প-সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পদক পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। সর্বশেষ ২০১৪ সালে ‘কার্তুজ’ চলচ্চিত্রে দেখা গিয়েছিল তাকে।